মহেশখালী প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেন্টাওশানের পিওসি লোকাল ক্যাম্পের ১২নং পয়েন্টের ক্যাম্প ইন্চার্জ (লোকাল) কামরুজ্জামান শেখের বিরুদ্ধে চরম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। চাকরির আড়ালে নিজস্ব লোকজনের নামে প্রতিষ্ঠান খুলে নিজেই ঠিকাদারি কাজ করছেন। ঘুষের বিনিময়ে কাজ দিচ্ছেন অন্যদের। এ ছাড়া কমিশনের ভিত্তিতে কাজ দিচ্ছেন তার নিজস্ব লোকদের। এতে শ্রমিক ও ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মাতারবাড়ী এলাকা। ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকায় কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। জাপানি সংস্থা জাইকার অর্থায়নে নির্মাণাধীন একটি প্রকল্পে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের মূল দায়িত্বে রয়েছে ১২টি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করছে ৪০টির বেশি সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিক ও ঠিকাদারদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের পেন্টাওশানের কামরুজ্জামান শেখ দুর্নীতিতে জড়িত। তিনি বাংলাদেশি। পেন্টাওশানের ক্যাম্প বস (লোকাল) তিনি নিজেদের লোকজনের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে বাগিয়ে নিচ্ছেন কাজ।
জানাগেছে, এই গুণধর কর্মকতা কামরুজামান শেখ চাকরির পাশাপাশি তিনি পেন্টাওশানের ফুড সরবরাহ কাঁচামাল সহ নানা সাপ্লাই ব্যবসা জিম্মি করে রেখেছে। বিভিন্ন সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাপ্লায়ার এর কাছ থেকে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। যারা তাকে মাশুহারা দেয়নি তাদের সরবরাহ কৃত কাঁচামাল নষ্ট বলে অর্ডার বাতিল করে। এই সুযোগে সে নিজস্ব নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে সেই সাপ্লাই কাজ চালিয়ে যায়। এতে করে নিয়োগ প্রাপ্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ে। এখন তারা লোকসান গুণতে গুণতে দেউলিয়া হওয়ার পথে।
ওই কর্মকর্তা যে ফুড সরবরাহ করে তা বেশিরভাগই পচা। গেল কয়েক বছর এ চাকরির আড়ালে ব্যবসার সুবাধে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে বলে এমন কথার উদয় হচ্ছে স্থানিয়দের মাঝে।
ভুক্তভোগীরা জানান, লাভ হোক বা না হোক- তাকে কমিশনের টাকা দিতে হবে। না হয় মালামাল পচাঁ বলে অর্ডার বাতিল করে বর্তমানে তিনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সকলের প্রতি জোর দাবি তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দূর্নীতি বন্ধ ও ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করা হউক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কামরুজ জামান শেখ দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি কোম্পানির চাকরীর বাইরে কোন কিছুর সাথে জড়িত নয়। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকের বিরাগভাজন হতে পারি। এটা স্বাভাবিক ও বটে। তাই বলে মিথ্যা অভিযোগ আনা মুসলিম হিসাবে ঠিক নয়। কিছু লোক নিয়মের বাইরে কাজ করা বন্ধ করতে চাওয়ায় আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগগুলো করছে। তিনি চাকরির নিয়মের বাইরে অন্য কোনো কাজে জড়িত নন। ঠিকাদারি কাজে ও জড়িত নন। তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
