আহসান বোডিং এর ম্যানেজার নাজিম ও নারী সাপ্লাই দেওয়ার ছবি

“কক্সবাজার শহরে পতিতার রামরাজ্য হুমকির মুখে যুব সমাজ”

“পুলিশ সাংবাদিক…..টাইম নাই। তারা আমার পকেটে থাকে। সবাইকে মাসিক টাকা দিয়ে ব্যবসা করছি। তোর হেডাম থাকলে কিছু কর”। কক্সবাজার শহরের লালদীঘি পশ্চিম দক্ষিণ পার্শ্বে অবস্থিত আহসান বোর্ডিং এ পতিতা ব্যবসা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের দম্ভ করে এসব কথা বলেছেন হোটেলের ম্যানেজার নাজিম উদ্দীন।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিদ্যুৎ গতিতে বেড়েই চলছে পতিতার রমরমা ব্যবসা। আগে সন্ধ্যা নেমে আসলেই কক্সবাজার শহরে জ্বলে উঠতো ল্যাম্পপোস্টের আলো। অন্ধকারকে ঢেকে দেওয়া এ আলোর নিচে দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ তাদের স্বপ্ন বিক্রি ও মনোকামনা পূরণ করতো। এখন আর অন্ধকার লাগে না পর্যটন নগরী কক্সবাজার হওয়ার সুবাদে বেড়েই চলেছে পতিতাবৃদ্ধি।

নারী সাপ্লাই দেওয়ার ছবি

কক্সবাজার একটি পর্যটন নগরী ও পর্যটন রাজধানী হিসেবে সুনাম রয়েছে। এখানে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত নগরী হিসেবে পেয়েছে স্বীকৃতি। কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত নজর কেড়েছে সবার। কিন্তু এই শহরের সেই সুনাম আদৌ অব্যাহত রাখতে পারবে কিনা এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।

পতিতার স্বর্গরাজ্য বহুল আলোচিত কক্সবাজার শহরের লালদিঘি পাড়ের আহসান বোডিং। আহসান বোডিং নাম শুনলে মানুষ মনে করে কক্সবাজারের অন্যতম পতিতার হাট যে হাটের সামনে মানুষ হেঁটে গেলেও বিভিন্ন সময় বিব্রত কর অবস্থায় পড়তে হয়। তার পতিতালয়কে কেন্দ্র করে দিনরাত চলে নানা অপরাধ কর্মকান্ড। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সেই স্বর্গরাজ্যে পতিতা সম্রাট ম্যানেজার নাজিম, বিভিন্ন জায়গা থেকে পতিতা সংগ্রহ করে কটেজ জোন ও হোটেল মোটেল জোনে সাপ্লাই করে থাকে। সাথে মাদকসেবিদের চাহিদা মেটাতে মাদকের ব্যবসাও রমরমা। বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে এই ব্যবসা, তাকে লাগাম দেওয়ার মত কেউ নেই। তার বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে সরকারি দলের নব্য নেতা থেকে শুরু করে কিছু অসাধু প্রশাসনের কর্মকর্তাও। কেহ প্রতিবাদ করলে লেগে যায় ঝামেলা তার আর রেহাই নেই, সরকারি দলের পাতি নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সন্ত্রাসীর তদবির ও হুমকি।

সরজমিনে তদন্তে সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যবেক্ষক করে দেখা যায়, ১৭-২০ বছরের যুবক থেকে শুরু করে ৩০-৩৫ বছরের লোকেরাই ওদের খদ্দের হিসেবে দেখা মিলে। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে ২-৩জন থেকে শুরু করে ৫-৬জন ও সময় সময় ১০-২০জনের পিকনিকে আসা লোক পর্যন্তও আসে, বোডিং এর সামনে থাকে দুই-তিনজন দালাল ও গেইটের দু’পাশে থাকে চার-পাঁচজন দালাল আবার ভিতরে থাকে ম্যানেজার নাজিম ও তার সহকারী রাজু। বাহিরের দালালদের ডাকে সাড়া দিলে সামনের গেইট খুলে ভিতরে নিয়ে চলে দর কষাকষি। দরদাম ঠিক হলেই টাকা বুঝে নেই ম্যানেজার নাজিম এবং তার নির্দেশেই তারই সহযোগী রাজু দ্বিতীয় গেইট খুলে রুমে রুমে নিয়ে যায়। ভিতরে বারটির মত রুম রয়েছে, প্রতিটি রুমে একটি করে মেয়ে রয়েছে। যার যেটা পছন্দ হয় সে রুমে ঢুকে পড়ে। আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঐখান থেকেই বাহিরের অন্য হোটেলে নিয়ে গিয়ে রাত কাঁটায়। আমাদের হাতে আটজন পতিতা বাহিরে নেওয়ার ছবি ও ভিডিও মজুদ রয়েছে, যাহ ম্যানেজার নাজিম ও তার সহযোগী রাজু গেইটে এসে গাড়িতে তুলে দেয়। তবে ওঠতি বয়সের ছেলেদেরই দেখা বেশি মিলেছে। তারা যৌবনের স্বাদ মেটানোর জন্য পতিতা-দের সাথে রাত যাপন করে।

খদ্দেরদের অপেক্ষায় দালালরা

রাজু প্রতিবেদককে বলেন, হোটেল টি উপভাড়া নিয়েছেন গোমাতলীর ইসমাইল সাহেব। সে ১০-১২ বছর হবে এই ব্যবসা করে, তবে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে পার্টনারশিপে গার্মেন্টস খুলেছে সে, তাই গত দুইমাস ধরে কক্সবাজারে নেই। হোটেল পরিচালনা করেন সাতকানিয়া লোহাগড়ার নাজিম উদ্দিন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রেমের ফাঁদ ফেলে অথবা জোর করে যুবতী নারীদের কক্সবাজার নিয়ে আসে একটি চক্র। বাংলাদেশীদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারীদেরও টার্গেট করেছে পাচারকারীরা। সম্প্রতি ফাঁদে ফেলে রোহিঙ্গা নারী পাচার অনেক বেশি বেড়ে গেছে। পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক নারী খুনেরও শিকার হয়েছে।

সচেতন মহলের দাবি, লালদিঘির পাড়ের গড়ে ওঠা সবকটি হোটেলেই এইসব পতিতার দেখা মেলে। হোটেল গুলোতে শুধু পতিতার ব্যবসা নয় মরন নেশা ইয়াবা থেকে শুরু করে আরো অনেক অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত। কিন্তু প্রশাসন পতিতার বিরুদ্ধে কোন ভূমিকা নাই বলে অভিযোগ ওঠে সচেতন মহলের।

নারী ও মাদক কারবারি ম্যানেজার নাজিম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার নাজিম বলেন, আপনার সাথে সামনাসামনি আলাপ করবো, আপনি আমার অফিসে আসুন। অস্বীকৃতি জানালে ফোন কেটে দেন। একটু পরে সে ফোন করে আপনি কি বলতে চান এইটা শহরআলীর হোটেল, সে ব্যবসা করতেছে, সে পুলিশ সাংবাদিকদের অকর্থ ভাষায় গালিগালাজ করে বলে সহরআলী কাউকে পরওয়ানা করে না, কোন আইন মানে না, পুলিশ সহরআলীর পকেটে তুই কিসের অকর্থ ভাষা। এরপর শুরু হয় অকর্থ ভাষায় গালিগালাজের ওয়াজ ও হুমকি যাহা প্রতিবেদকের কাছে রেকর্ড রয়েছে।

এর পরপরই প্রতিবেদকের মোবাইলে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ও যুবলীগ পরিচয়ে কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার আরেকজন ফোন করে পতিতার বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য তদবির করে বলেন, নাজিম বিভিন্ন সময় আমাদের সহযোগিতা করেন (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে)।

এই পতিতা গুলো শহরের ঘোনাপাড়া, বাদশাঘোনা, বৈদ্দঘোনা, সমিতিপাড়া, লাইটহাউজ, পাহাড়তলি, তারাবনিয়ারছড়া সহ আরো বিভিন্ন গোপন আস্তনা ও এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে এবং তাদের এলাকায় বিভিন্ন শক্তশালি সিন্ডিকেট আছে। যার ফলে কেউ কিছু বলার এবং প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। ফলে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে যুবসমাজ ধ্বংস করার একটি অন্যতম হাতিয়ার পতিতা। তাদের ছোবলে রেহাই পাচ্ছেনা সমাজের প্রায় সব শ্রেনির সানুষ। তাদের চোবল থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক।

অভিযোগ রয়েছে, এসব পতিতাদের দ্বারা নিয়মিতই ধোকাবাজির স্বীকার হচ্ছে খদ্দের ও পর্যটকরা। সেই সাথে ঘটছে ছিনতাইয়ের মত ঘটনা। ধোকাবাজির স্বীকারের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। লোক-লজ্জার ভয়ে কেউতো এর প্রতিবাদ করেই না।

এইসব বিষয়ে জানতে কক্সবাজার শহরের চিহ্নিত পতিতা ব্যবসায়ী ইসমাইল সাহেবের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও তার নাম্বার বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজার অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবু জাফর ছিদ্দিকী জানান, শহরকে পতিতাবৃত্তিসহ অসামাজিক কার্যকলাপমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবী জানান।

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার (ওসি) তদন্ত বিপুল চন্দ্র বলেন, মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সবসময় জিরো টলারেন্স। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *