মেহেদী ডেস্ক: ‘নৌকারে ভোট দইয়া আছে, কিন্তু লইয়া নাই। (অর্থাৎ নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার মানুষ আছে-কিন্তু নেওয়ার মানুষ নেই।) আমার পেছনে দলের কেউ নেই। আমাকে ফেলে সবাই চলে গেছে।’ নৌকা প্রতীকধারী একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর এরকম একটি অডিও-ভিডিও এখন ভাইরাল হয়ে পড়েছে।কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সোমবারের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবু সৈয়দ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে এসব কথাগুলো বলেন।

এরকম ঘটনায় লোকজনের মধ্যে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, দলের তৃণমূল থেকে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের একজন দুর্বল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বড় ধরনের ‘আত্মঘাতী’ কাজ করা হয়েছে।আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন শেষে তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আক্ষেপের সঙ্গে বলেন- আমাকে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বানিয়ে উনারা সবাই বিএনপি’র কাছে বেচা-কেনা হয়ে গেছে।

আমার সঙ্গে কেউ নেই। সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এই হতভাগ্য চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন-‘উনি এক্কেবারে গায়েব হয়ে গেছেন। আমি ১০/১৫ বার করে ফোন করেছি কিন্তু ফোনও ধরেন না।’ তিনি দুঃখের সঙ্গে বলেন, মাঝে মধ্যে আমার পক্ষে সভায় মিলিত হন দলীয় লোকজন। কিন্তু পরের দিন আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।ভোট কেন্দ্রে উনার এজেন্ট ছিল কিনা প্রশ্নের জবাবে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সৈয়দ বলেন-আমার পক্ষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের এজেন্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তো সবাই সরে গেছে।

অনেক কেন্দ্রে নাকি নৌকার এজেন্টও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন-আমার সঙ্গে যদি নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোটই করা না হয় তাহলে আমাকে কেনইবা মনোনয়ন দেওয়া হলো? প্রসঙ্গত, টেকনাফ সদর ইউনিয়নে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের আবু সৈয়দ ছাড়াও ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাফর আলমের ছেলে শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান এবং গতবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকধারী পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বিএনপি পরিবারের সন্তান জিয়াউর রহমান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

রাতে এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময়ে পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পাওয়া না গেলেও বেসরকারিভাবে বিএনপি পরিবারের সন্তান জিয়াউর রহমান অগ্রগামী ছিলেন। দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছেন মোহাম্মদ শাহজাহান ও তৃতীয় নম্বরে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের আবু সৈয়দ।উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমান ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করা ১০২ জন কারবারি হিসাবে দীর্ঘ ২ বছর কারাগারে আটক থেকে কয়েক মাস আগে জামিনে মুক্ত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *