সাখাওয়াত হোসাইন:

কক্সবাজার রামুর বিভিন্ন ইউনিয়নে বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। শুধু তাই নয় বৈশাখী অনুষ্ঠানের নামে পরিবেশন করা হচ্ছে অশ্লীল নৃত্য। এসব অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে কৃষকসহ সাধারণ মানুষ, বিপদগামী হচ্ছে যুব সমাজ।

প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব উদাম নৃত্য ও প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসলেও রহস্যজনক কারনে এসব অসামাজিক কর্মকাণ্ড বন্ধে কোন অভিযান চালায়নি থানা পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা, রশিদনগরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বলি খেলার নাম দিয়ে পালাক্রমে চলছে প্রকাশ্য জুয়া খেলা। সন্ধ্যা নামলেই বৈশাখী অনুষ্ঠানের নামে চলে নারীদের অশ্লীল রগরগে নৃত্য। এসব কর্মকাণ্ডের অন্যতম গ্রাহক স্কুল কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের যুবক। প্রতিদিন এসব উদাম নৃত্য ও জুয়া খেলে নিঃস্ব হওয়ার পাশাপাশি চরমভাবে নৈতিক অধ:পতনের দিকে যাচ্ছে যুব সমাজ।

স্থানীয়রা বলেন, আন্তঃজেলা জুয়াড়িদের একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট বলি খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে এসব অপকর্ম চালাচ্ছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, এসব অপকর্ম চালাতে তারা প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করেছে। শুধু তাই নয়, সচেতন মহলের চোখে ধুলো দিতে প্রতি তিন দিন পর পর স্থান পরিবর্তন করে পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছে এই জুয়াড়ি সিন্ডিকেট।

আয়োজক কমিটির একাধিক সদস্য জানান, তারা উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করেই এসব জুয়ার আসর পরিচালনা করছেন।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (২১জুন) বিকালে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বিকেএসপি পিছনে নূর পাড়া গ্রামে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। ৩ দিনব্যাপী বলীখেলার শেষ দিনে আজ। মেলার পাশের প্রকাশ্যে ৮/১০টি ছোট-বড় স্টলে চলছিল জমজমাট জুয়ার আসর। এসব বোর্ডে লাখ লাখ টাকা নিয়ে জুয়া খেলায় মেতেছে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষ।

লোভের ফাঁদে পড়ে এক দিনে অনেকে সর্বশান্ত হয়েছে। স্থানীয় কৃষক ও যুব সমাজ হুমরি পড়ে ওই খেলার আসরে। অনেকেই লাভের আশায় বোর্ডে টাকা ফেলে নিঃস্ব হন। এসব মেলার কারণে হাজার হাজার নিরীহ কৃষক পরিবার এবং যুবসমাজ নিঃস্ব ও বিপদগামী হচ্ছেন।

বলি খেলার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলার বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নয়,যদি কেউ অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসানোর বিষয়ে জানতে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফার মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়ার সম্ভব হয়নি।

এসব অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *