নিজস্ব প্রতিবেদক:

সদরের খরুলিয়ার মাদক সাম্রাজ্যের বেশ পরিচিতমুখ ‘ইয়াবা সুন্দরী’খ্যাত সেই কহিনুর আক্তার নামের এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ১৮ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইয়াবার চালানটির মুল মালিক কালু বরাবরেই পর্দার আড়ালে থেকে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, অভিযানে কহিনুদের মতো এসব মাদকের বাহকেরা গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা ও মাদক কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক খরুলিয়া কোনারপাড়া গ্রামের নুরুল আমিন প্রকাশ কালু থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে থামছে না মাদক ব্যবসা। উল্টো বাড়ছে।

গ্রেফতারকৃত কহিনুর আক্তার রামু উপজেলার কলঘর গ্রামের মাদক কারবারি নুরুর স্ত্রী। বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সদরের খরুলিয়া নয়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ আছে, ওই ইয়াবার চালানটি কোনারপাড়াস্থ কালুর বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় নয়াপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার হন কহিনু। তিনি গত কয়েক বছর ধরে কালুর মাদক বহন করে আসছেন। তার স্বামী নুরুও কালুর আইসের চালান ঢাকায় পাচার করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। স্বামীকে জামিনে মুক্ত করার আশ্বাস দিয়ে কালু কহিনুরের হাতে জব্দ হওয়া ইয়াবার চালানটি তুলে দেন।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, বুধবার দুপুর ১ টার দিকে র‌্যাব-১৫ এর একটি দল খরুলিয়া নয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় কহিনুর আক্তারকে ১৮ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গত কয়েক বছরে খরুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়েছেন অর্ধশত মাদক মাদক পাচারকারি। তবে তাদের অধিকাংশই মাদক সম্রাট কালুর ইয়াবা-আইস বহনকারী হিসাবে কাজ করতো। কালু দরিদ্র ও নিুবিত্ত পরিবারের লোকজনকে টার্গেট করে তাদের মাধ্যমে ইয়াবা সাপ্লাই করতো। মাদক সাম্রাজ্যে এরা কেবল ‘বাহকের’ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু কালু মাদক আমদানি থেকে শুরু করে খরুলিয়ার বিশাল মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি কখনো ধরা পড়েনি।

সূত্রমতে, বর্তমান সময়ে খরুলিয়ার শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার কালু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অভিযোগ আছে, কালু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত সদস্যদের ছত্রছায়ায় বীরদর্পে অবস্থান করছে নিজ এলাকায়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, সম্প্রতি খরুলিয়ায় কালুর নেতৃত্বে ইয়াবা ও আইসের বড় চালান ঢুকছে। উখিয়ার বালুখালীর ফরিদের মাধ্যমে ইয়াবা সংগ্রহ করে মাদকের মজুত গড়ে কালুর বাড়িসহ তার আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে। পরে তার নিয়োগ দেয়া পাচারকারিদের মাধ্যমে সরবরাহ করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কালু সরাসরি উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত থেকে সংগ্রহ করে ইয়াবা, আইস ও সোনা চোরাচালানের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। গত এক বছরে খরুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ মাদক উদ্ধার হওয়া মাদকের নেপথ্যের নায়ক কালু হলেও নানা কৌশলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান তিনি।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছেন, খরুলিয়ার শীর্ষ গডফাদারদের ধরতে তারা কাজ করছে। তাদের পেছনে কারা শক্তি জোগাচ্ছে তাদেরও খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সরকার মাদক নির্মূলে খুবই কঠোর এবং বদ্ধপরিকর। ফলে তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন ছাড় দেয়া হবে না। মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে আমাদের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *