শহিদুল ইসলাম ইমরান
ট্রাফিক পুলিশের দুইদিনের উচ্ছেদ অভিযানেও দখলমুক্ত করা যায়নি কলাতলী ডলফিন মোড়ের ফুটপাত। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বৃক্ষরোপণ করে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা। এরপরও কোনকিছুতেই দমানো যাচ্ছে না ডলফিন মোড়ের ফুটপাত দখলদারদের। অভিযানের ঘন্টা না পেরোতেই ফের দখল হয়ে যায় ফুটপাত। যেন চোর পুলিশের খেলায় মেতে উঠেছে দখলদাররা।
গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ট্রাফিক পুলিশ ও ছাত্রদের সমন্বয়ে অভিযান করে ডলফিন মোড়ে দীর্ঘ দিনের দখল হয়ে থাকা ফুটপাত দখল মুক্ত করা হয়। অভিযানের ঘন্টা না পেরোতেই আবারো দখল হয়ে যায় ফুটপাত এবং সৃষ্টি হয় একই পরিবেশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার থেকে নিয়মিত প্রকাশিত নতুন সময়ের দৈনিক মেহেদী পত্রিকায় “ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের পর ফের দখল ডলফিন মোড়ের ফুটপাত” শিরোনামে সংবাদ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আবারো অভিযানে যায় ট্রাফিক পুলিশ। উচ্ছেদ করা হয় ৫০টির অধিক ঝুপড়ি দোকান। উচ্ছেদের পর দখল মুক্ত হওয়া স্থানে বৃক্ষরোপণ করে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা। উচ্ছেদ অভিযান ও বৃক্ষরোপণ শেষ হওয়ার পর আবারো দখল করে দোকান বসাই দখলদাররা।
জানা যায়- কলাতলী ডলফিন মোড়ে ফুটপাত দখল করে তৈরি হয়েছে সাম্পান ও টুরিস্ট জীপের স্থায়ী পার্কিং, সাথে রয়েছে অবৈধ রেন্ট বাইকও। আবার টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডে চলাচল করা বিভিন্ন পরিবহন গুলোর কাউন্টার ও পার্কিং করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া আসার বড় বড় গাড়ির পার্কিং ও কাউন্টার এই ফুটপাতের জায়গাতে। ডলফিন মোড়ে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হইতে সমুদ্রের সৈকত পর্যন্ত পুরো ফুটপাত ও চলাচলের রাস্তা দখল করে রাখায় পর্যটকদের চলাচলে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেই সাথে অপরিকল্পিত এসব পার্কিং পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। বিভিন্ন সময় পর্যটন ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান করলেও অভিযানের পরপরই আবারো সৃষ্টি হয় একই পরিবেশ।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলেন- পর্যটকদের চলাচলের রাস্তা, ফুটপাত দখল করে নানা ভ্রাম্যমাণ স্থাপনা, রেন্ট-বাইক ও দোকানপাট গড়ে উঠেছিল। এতে পর্যটক ও স্থানীয়দের চলাচলের পথ সংকীর্ণ ও অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। ময়লা আবর্জনা ফেলা অস্বাস্থ্যকর ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে এসব দখলদাররা। ফলে দূরদূরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা কক্সবাজার নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন- আমরা গতকাল (রবিবার) উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। তারা আবার দখল করে নেয়। তাই আজকে (সোমবার) আবারও অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০টি অবৈধ দোকান ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- ফুটপাত দখলে থাকা সকল ভ্রাম্যমাণ হকার ও যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা ছাত্রদের সাথে সুপরিকল্পিতভাবে এই অভিযান করেছি যা সাপ্তাহব্যাপী ফলোআপে থাকবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে সামনের পর্যটন মৌসুমে সুন্দর একটি পর্যটন বান্ধব পরিবেশ যেন উপহার দিতে পারি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের প্রতিনিধিরা বলেন- ফুটপাত দখল মুক্ত করে দূর দুরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা যেন তাদের ক্লান্তি দূর করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। কোন রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে যদি কেউ ফুটপাত দখলের চেষ্টা করে তাদের প্রতিহত করা হবে।