নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের নিদানিয়ায় মাদক বিরোধী সেমিনারে মাদক ব্যবসায়ীর উপস্থিতি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে। এতে স্বাভাবিকভাবে আয়োজক কমিটির সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীর নাম মোহাম্মদ হাফিজ উল্লাহ (৩০) তিনি জালিয়াপাল ইউনিয়নের নিদানিয়া গ্রামের মো:ইউনুচের ছেলে। এর আগেও ইয়াবাসহ তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, জালিয়াপালং ইউনিয়নের নিদানিয়া গ্রামে ইয়াবার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় কিছু যুবক ও হেলফ কক্সবাজারের যৌথ উদ্যোগে গেল ১৬ আগস্ট একটি মাদক বিরোধী সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এ সময় ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির আইসি অলিউর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এতে অনেকের মতো হাফিজ উল্লাহও উপস্থিত ছিলেন। একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী কিভাবে সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল আমিন চৌধুরী রাশেল বলেন, যেখানে সেমিনার হয়েছে সেটি আমার এলাকা হওয়ায় আমাকে অতিথি হিসেবে দাওয়াত করেছে যুব সমাজ। সেমিনারে বক্তব্য শেষ করে কক্সবাজারে ফিরে আসি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সাংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি যে সেমিনারে উপস্থিত যুবক হাফিজ একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। বিষয়টি আমি জানার পর তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি ইয়াবার মতো ঘৃণিত মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকে তবে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিবেন।

হেলপ কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী আবুল কাশেম বলেন, নিদানিয়া গ্রামে মাদক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় যুবকদের সাথে নিয়ে আমরা মাদক বিরোধী সেমিনারের আয়োজন করি। উক্ত অনুষ্ঠানে কে উপস্থিত ছিল কে ছিল না তা আমরা জানি না। যেহেতু মাদক বিরোধী সেমিনার সেহেতু সবার উপস্থিতি আমরা কামনা করেছি। কারণ উক্ত সেমিনারের মাধ্যমে কেউ যদি সঠিক পথে ফিরে আসে মন্দ কি ।

স্থানীয় মেম্বার মকসুদ উল্লাহ বলেন, এলাকায় মাদকে প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে কাজ করছি আমরা। হাফিজ উল্লাহ ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত কিনা আমার জানা নেই।

এ ব্যপারে জানতে অভিযুক্ত হাফিজ উল্লাহকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আইসি ইনানী পুলিশ ফাঁড়ি অলিউর রহমান বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। এলাকার কাউকে তেমন চিনি না। তাই সেমিনারে কে উপস্থিত ছিল বা ছিল না তা আমি বলতে পারবো না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান বলেন, মাদক কারবারিদের তালিকা করা হচ্ছে। এখন নতুন নামও তালিকায় সংযুক্ত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত অনেকেই কারাগারে আছে। আবার অনেকেই জামিনে বেরিয়ে পুনরায় ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। তাদেরও কাউকে কাউকে ফের গ্রেফতারও করা হয়েছে। শুধু বিক্রেতা নয়, মাদক কারবারে অর্থ লগ্নিকারী, পৃষ্ঠপোষক, সংরক্ষক, বহনকারী, খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *