মোহাম্মদ ইলিয়াছ: বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় তিন বছরের ১ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ১৮ আগস্ট, বুধবার সকাল ৮টা বাজে আজিজনগর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয় বলে জানায় তার বাবা। শিশুটির নাম ইয়াছিন আরাফাত(৩)। সে চকরিয়া উপজেলার মাইজ কাকারা এলাকার বেলাল হোসেনে ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শিশুটিকে হার্নিয়ার অস্ত্রোপাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল চকরিয়ার মালুমঘাট হাসপাতালে। পথে এক দালালের খপ্পরে পড়ে ২০ হাজার টাকা কন্ট্রাকে অস্ত্রোপাচার করাবে বলে নিয়ে আসে লামার আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালে। কথা মতো কট্রাক্টও হয় আজিজনগর জেনারের হাসপাতালের ডাক্তার জেমস ইটেনের সাথে। কোন এ্যানেসথিওলজিস্ট ছাড়াই ১৭ আগস্ট বিকাল ৫ টায় অস্ত্রোপাচার করেন ডাক্তার জেমস ইটেন। তাতেই শেষ নয়। যেখানে তিন বছরের এই শিশুটিকে অস্ত্রোপাচারের পর ক্লিন্ডামাইসিন ইনজেকশন ফর্ম ব্যবহার করাটা উচিত ছিল সেখানে ক্লিন্ডামাইসিন ক্যাপসুল ব্যবহার করেছেন যার কারনে এই ক্যাপসুল গলা শ্বাস নালিতে আটকে শিশুটির মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সামনে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আজিজনগর পুলিশ ক্যাম্পের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।
শিশুটির বাবা মোঃ বেলাল বলেন, ‘১৮ আগস্ট সকাল বেলা তিন বছরের এই ছোট্ট শিশুটিকে যখন এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় সাথে সাথে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত ডাক্তার এবং নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েও অবস্থার অবনতি হওয়ায় জরুরীভাবে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু ঐখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষনা করে।
শিশুটির নানি বলেন, ‘সকালে সাড়ে সাতটা বাজে আমার নাতিকে হাসপাতালের একজন নার্স এসে জোর করে নাক চেপে ধরে এই ক্যাপসুলটি খাওয়ায় দেয় এবং খাওয়ানোর পর পরেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। তিন বছরের বাচ্চাকে ক্যাপসুল খাওয়াতে আমি জীবনেও দেখিনি।’
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, ‘এটা অবশ্যই ভুল চিকিৎসা। বাচ্চাটিকে ক্যাপসুল না দিয়ে ইনজেকশন ফর্ম ব্যবহার করতে পারতো। তাছাড়াও এ্যানেসথিওলজিস্ট ছাড়া কোন ভাবে এই হার্নিয়া অস্ত্রোপাচার সম্ভব না। যদি করে থাকে সেটাও অপরাধ।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন অংসাই প্রæ মারমা বলেন, ‘এই হাসপাতালের নামে অসংখ্য অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। হাসপাতালটির কোন অনুমোদন নেই। তবে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু যথেষ্ট অনিয়ম ধরা পড়াতেই তাদেরকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। খুব শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *